একটি নতুন জরিপে দেখা গেছে যে ফ্লোরিডায় ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি কাছাকাছি। ফ্লোরিডার সাম্প্রতিক রিপাবলিকান বিজয়ের ইতিহাস সত্ত্বেও, হ্যারিস এখন এই গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে ট্রাম্পের কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন।
মূল তথ্য:
- জরিপের ফলাফল: সর্বশেষ USA TODAY/Suffolk University/WSVN-TV জরিপে ট্রাম্প হ্যারিসকে ৫ শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন। ট্রাম্পের সমর্থন ৪৭%, হ্যারিসের ৪২% এবং স্বাধীন প্রার্থী রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়রের ৫%, আর ৫% ভোটার এখনো সিদ্ধান্ত নেননি।
- ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: এই ব্যবধানটি অন্যান্য সাম্প্রতিক জরিপের চেয়ে ছোট এবং ২০২২ সালে গভর্নর রন ডিসান্টিসের ১৯ পয়েন্ট ব্যবধানের চেয়ে অনেক কম। এই পার্থক্য জরিপের ৪.৪% ভুলত্রুটি সীমার মধ্যেও রয়েছে।
নির্বাচনী প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন
- ফ্লোরিডার রাজনৈতিক দৃশ্যপটের পরিবর্তন: একসময় একটি প্রধান ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্য হিসেবে পরিচিত ফ্লোরিডা এখন রিপাবলিকান পার্টির দিকে ঝুঁকেছে। এখানে ১ মিলিয়নেরও বেশি নিবন্ধিত রিপাবলিকান ভোটার রয়েছে ডেমোক্র্যাটদের চেয়ে বেশি। এই পরিস্থিতিতে হ্যারিসের কাছাকাছি পোলিং সংখ্যা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
- জরিপকারীর মন্তব্য: Suffolk University Political Research Center-এর পরিচালক ডেভিড পালিওলগোস বলেছেন, এমন কঠিন পরিস্থিতিতে হ্যারিসের মাত্র ৫ পয়েন্ট পিছিয়ে থাকা খুবই চমকপ্রদ।
ভোটারদের উৎসাহ এবং মতামত
- ভোটারদের উৎসাহ: হ্যারিস এবং ট্রাম্প উভয়েই তাদের ভোটারদের কাছ থেকে শক্তিশালী সমর্থন পাচ্ছেন। জরিপে দেখা গেছে, প্রতিটি প্রার্থীর ৮৯% ভোটার তাদের প্রার্থীকে ভোট দিতে অত্যন্ত বা কিছুটা উৎসাহী।
- হ্যারিসের জনপ্রিয়তা: ফ্লোরিডায় হ্যারিসের জনপ্রিয়তা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চেয়ে সামান্য বেশি। হ্যারিসের পক্ষে ৪৪% ভোটার ইতিবাচক মতামত দিয়েছেন, যেখানে বাইডেনের পক্ষে ৩৯%। হ্যারিসের নির্বাচনী দৌড়ে প্রবেশ করার পর থেকে তিনি ডেমোক্র্যাটিক ভোটারদের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছেন এবং উল্লেখযোগ্য তহবিল সংগ্রহ করেছেন এবং দেশব্যাপী বড় জনসমাগম করেছেন।
ট্রাম্পের জন্য চ্যালেঞ্জ
- স্বতন্ত্র ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের সংগ্রাম: ফ্লোরিডায় ট্রাম্প স্বাধীন ভোটারদের মধ্যে ৭ পয়েন্টে পিছিয়ে আছেন। এটি একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা, কারণ তিনি ২০২০ সালে বাইডেনের কাছে ১১ পয়েন্টে হারিয়ে ফেলেছিলেন, তবে তবুও রাজ্যটি জিতেছিলেন।
- ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া: হ্যারিসের ব্যক্তিগত আক্রমণ, বিশেষ করে তার জাতিগত পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যা তার দলের মধ্যেই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ফ্লোরিডার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কৃষ্ণাঙ্গ ভোটার থাকায় এই মন্তব্যে বিপুল প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
ফ্লোরিডার ভোটারদের মতামত
- জেনি ব্রুকব্যাংক, স্বাধীন ভোটার: ৭২ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত ছোট ব্যবসার মালিক জেনি একসময় রিপাবলিকান ছিলেন, কিন্তু এখন হ্যারিসকে সমর্থন করেন। তিনি হ্যারিসের শক্তি এবং উদ্যোগকে প্রশংসা করেন এবং তাকে ভোট দেওয়ার জন্য উদগ্রীব।
- বারবারা ওপেনহেইমার, রিপাবলিকান ভোটার: ৭৯ বছর বয়সী বারবারা ২০২০ সালে ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন, কিন্তু এবার কেনেডিকে ভোট দিতে যাচ্ছেন। তিনি ট্রাম্পের আচরণ এবং কাজকর্মের সমালোচনা করেন, বিশেষ করে ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। তিনি গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে উদ্বিগ্ন।
- ডেভিড পিটেনজার, ট্রাম্প সমর্থক: ৮৬ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডেভিড ট্রাম্পের একজন দৃঢ় সমর্থক। তিনি অবৈধ অভিবাসন এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং বিশ্বাস করেন যে ট্রাম্প এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলা করার জন্য সর্বোত্তম প্রার্থী।
উপসংহার
সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে যে ফ্লোরিডায় লড়াইটি প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি কাছাকাছি, যেখানে হ্যারিস উল্লেখযোগ্য শক্তি দেখাচ্ছেন। আসন্ন নির্বাচন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে, কারণ উভয় প্রার্থীই ফ্লোরিডার গুরুত্বপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন।
সূত্রসমূহ:
- USA TODAY/Suffolk University Poll
- WSVN-TV Survey Results
- Suffolk University Political Research Center